নবীগঞ্জের কালাভরপুরে দু’গ্রপের সংঘর্ষে আহত ২৫, বাড়িঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ! ১ জন গুলিবিদ্ধ!


নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি : নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের কালাভরপুর গ্রামে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (১৪মার্চ) দিবাগত গভীর রাতে দু’দলের লোকদের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘঠেছে।


পুলিশ ও ফায়ারসার্ভিসের একদল বাহিনী ঘটনাস্থল পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের  কমপক্ষে ২৫ জন। এদের মধ্যে আশংকা জনক অবস্থায়, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ  আবুল কালাম (৪৫), এবং অপর আহত সবুজ মিয়া (৪০), দেলোয়ার হোসেন (৩০)সহ ১০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে ভর্তি, বাকী আহতদের নবীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কালাভরপুর গ্রামের  বিবদমান দু’টি গ্রুপের মধ্যে পঞ্চায়েত পক্ষের লোকজনের সাথে মসজিদের কমিটি গঠন নিয়ে যুবলীগ নেতা আলমগীর খাঁন সহ তাদের গ্রুপের সাথে গ্রামের পঞ্চায়েত পক্ষের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে  দাঙ্গা-হাঙ্গামা, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ,  বাড়িঘর হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে চলেছে। এ নিয়ে দু’ দলের মধ্যেই একাধিক মামলা মোকদ্দমা রয়েছে। এনিয়ে দফায় দফায় চোরাগুপ্তা হামলা সহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষেই হামলা পাল্টা হামলা ও  মামলা দায়ের করা হয়।


গ্রামবাসীর অভিযোগ: একাধিক মামলার আসামী আলমগীর খানের লোকজন বিজ্ঞ  আদালত থেকে জামিনে এসেই পঞ্চায়েত পক্ষের লোক মৃত আব্দুল বারিকের পুত্র আবুল কালাম  গংদের ঘর-বাড়ীতে ভাড়াটে সন্ত্রাসী লোকজন নিয়ে  শুক্রবার রাত ১০টায় হঠাৎ অতর্কিত  হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।


স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানাযায়, উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের কালাভরপুর গ্রামের মৃত আজিজুল খানেঁর ছেলে আলমগীর খানগং ও পঞ্চায়েত  পক্ষের  মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মসজিদ কমিটি ও  আধিপত্য বিস্তার’কে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছে। উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা মোকদ্দমাও রয়েছে। ঘটনার রাত  পুর্ব শক্রতার জেরধরেই আলমগীর খানের নেতৃত্বে   (১৪ মার্চ) রাত অনুমান ১০টার  দিকে উভয় পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ বাধেঁ। এতে ইটপাটকেলসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র  ব্যবহার করা হয়েছে বলে গ্রামবাসীর অভিযোগ৷ 


সংঘর্ষ চলাকালে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে   আলমগীর খানেঁর নেতৃত্বে  তার পক্ষের -ই  লোকজনের বাড়িঘর সহ প্রতিপক্ষের লোকজনের ঘরবাড়ীতে  হামলা, অগ্নিসংযোগ  চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ  করার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ এতে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। পরে  খবর পেয়ে অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেনের  দিকনিদের্শনায় ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ দুলাল মিঞার নেতৃত্বে একদল পুলিশ এবং ফায়ারসার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।


সংঘর্ষে অন্যান্য আহতদের সিলেট, নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। দূর্বৃত্তদের  দেয়া আগুনে ও বাড়ীঘর লুটপাটের ঘটনায় কয়েক লক্ষাধিক টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন। 


নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ দুলাল মিঞা জানান, পুলিশ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে এলাকার আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভ রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতির উপর পুলিশি নজরদারী অব্যাহত রয়েছে।  এ ব্যাপারে ওসি মোঃ কামাল হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়টিকে আমরা অতি গুরুত্বের সহিত খতিয়ে দেখছি,তবে গুলিবিদ্ধ আহতের  বিষয়টি তিনি শুনেছেন বলেও জানান৷


শেয়ার করুন